সরি দোস্ত আসতে একটু দেড়ি হয়ে গেল আসলে কোন রিক্সা পায়নি তাই দেড়ি হয়ে গেল ৷
শালা তোর জন্য সেই কখন থেকে অপেক্ষা করছি আমরা দুজন ৷ আর তুই এসে বলছিস ছরি ৷
আরে বললাম তো সরি এবারে মত মাফ করে দে দোস্ত ৷
আচ্ছা ঠিক আছে মাফ করে দিলাম ৷
তো দাড়িয়ে থাকবি নাকি তাড়াতাড়ি চল ৷
হুম দ্বাড়া রিয়া আসুক তারপর সবাই মিলে একসাথে যাব ৷
ওহহহ আপনাদের তো পরিচয় দিতে ভুলে গেছি ৷ আমি মেহেদী হাসান ৷ অনার্স ১ ম বর্ষে পড়ি ৷ আমার বাড়ি ঝিনাইদহ জেলায় কোটচাদপুর থানায় ছোট একটা গ্রামে বাড়ি ৷ আর আমি এখানেই একটা কলেজে পড়শুনা করি ৷
আর যার সাথে কথা বললাম সে হল আমার জানের জিগার বন্ধু রাজু ৷ আর যে রিয়ার কথা বলল সে হল রাজুর গার্লফ্রেন্ড ৷ আমরা সবাই মিলে একজায়গায় বেড়াতে যাব ৷
তারপর কিছুক্ষন সময় অপেক্ষা করার পর রিয়া আসল কিন্তু রিয়া একা নয় ৷ তার সাথে একজন মেয়ে আসছে ৷
রিয়া বলল ও হচ্ছে আমার মামাত বোন অনিকা ৷ তবে আমার থেকে বড় ৷ ও এবার অনার্স ৩ য় বর্ষে পড়ে ৷ বাড়ি একা থাকতে বোরিং হয়ে যাবে তাই সাথে নিয়ে আসলাম ৷
অনিকার চেহারটা খুব সুন্দর অনেক মায়াবী ৷ চোখ দুটোই অনেক মায়া আছে ৷ তবে আমার থেকে সিনিয়র ৷ আমার সব আশা ভেঙে চুরমার হয়েগেল ৷
আমিঃ খুব ভাল করছ একসাথে সবাই ঘুরতে যাওয়া যাবে ৷
তারপর সবাই মিলে হাটতে লাগলাম ৷ হাঠতে হাটতে একটা স্থানীয় পার্কে চলে আসলাম সেখানে অনেক গুলো ছোট বড় পুকুর আছে ৷ তার পাশে হাটতে লাগলাম ৷
অনিকা কে আমার খুব ভাল লাগল খুব পছন্দ হয়েছে ৷ একটা মেয়ে হয়ে যে যে সব গুনাবলি থাকার কথা সব ওই মেয়ের মধ্যে আছে ৷
তখন দেখি রিয়া আর অনিকা একটু দুরে গিয়ে আলাদা ভাবে কথা বলছে ৷ আর আমি আর রাজু তাদের আলাপ আলোচনা দেখছি ৷
কিছুক্ষন পর রিয়া আমার সামনে আসল এসে যা বলল তা শুনে আমি আর রাজু অনেক অবাক হলাম ৷
রিয়াঃ মেহেদী ভাইয়া আপনার সাথে একটু কথা আছে একটু শুনবেন ৷
আমিঃ হুম বল কি বলবে ৷
রিয়াঃ অনিকা আপু আপনাকে অনেক পছন্দ করছে ৷ তবে আপনাকে ভালবাসার অভিনয় করতে হবে ৷
আমিঃ মানে আমি কিছু বুঝলাম না অভিনয় করতে হবে কেন ৷
রিয়াঃ কারন অনিকা আপু আপনার থেকে বড় সেজন্য ৷ আপনার সাথে ৬ মাসের প্রেম করবে ৷ তারপর যে যার মত আলাদা হয়ে যাবে ৷
আমি রিয়ার কথা শুনে খুব খারাফ লাগল ৷ তবে আমি কিছুতেই রাজি হয়নি ৷
তারপর অনিকা আমাদের কাছে এসে আমার হাত ধরে একটু সাইডে নিয়ে গেল ৷ তারপর বলল দেখ মেহেদী তুমি অনেক ভাল ছেলে তোমার মত ছেলেদের মেয়েরা অনেক পছন্দ করে ৷
আমিও তোমাকে পছন্দ করি তবে আমি তোমার সিনিয়র হওয়াই সেটা সম্ভাব না ৷ তাই আমরা মিথ্যা ভালবাসা করব ৷
আমরা সত্যি কারের প্রেমিক প্রেমিকার মত ব্যাবহার করব ৷ যেন কেউ বুঝতে না পারে ৷
অমিঃ কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব আপনি আমার সিনিয়র দুই বছরের পর ৷
অনিকাঃ আরে আমরা তো সত্যি কারের প্রেম করবনা ৷ আমরা তো শুধু অভিনয় করব ৷
আমিঃ ঠিক আছে ৷
তারপর অনিকা আমার ফোম নাম্বার নিল ৷ তার ফোন নাম্বার দিল ৷
অনিকাঃ তাহলে এখন থেকেই আমরা প্রেমিক প্রেমিকা এখন থেকেই আমাদের অভিনয় শুরু ৷
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে ৷
তারপর রাজু আর রিয়া অন্যদিকে চলে গেল কথা বলতে ৷
আর আমি আর অনিকা অন্যদিকে চলে আসলাম ৷ কিছুদূর আসার পর অনিকা আমার হাত ধরল ৷
আমি অনেক অবাক হলাম আর অনিকার দিকে তাকালাম আর ৷ অনিকা বলল কি দেখছ এমন করে আরে এটা অভিনয় সত্যি নয় ৷
তারপর আমি অনিকার হাত ধরলাম ৷ তারপর একসাথে অনেক ঘুরাঘুরি করলাম ৷ সন্ধ্যার সময় যে যার বাড়িতে চলে আসলাম ৷
রাতে খাওয়া দাওয়া করে যেই ঘুমাতে যাব সেই অনিকা ফোন দিল ৷
আমি রিসিভ করলাম ৷ আর সাথে সাথে অনিকা বলল হাই জানু কি করছ ৷
আমিতো অবাক অনিকার কথা শুনে তারপর স্বাভাবিক হয়ে তার সাথে কথা বললাম ৷ তারপর অনিকার সাথে অনেক্ষন কথা বললাম ৷
তারপর অনিকা বলল যে কাল বিকালে দেখা করতে ৷
আজ বিকালে অনিকার সাথে দেখা করার কথা ৷ আমি সময়মত নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে অনিকার জন্য অপেক্ষা করছি ৷
কিছুক্ষন পর অনিকা আসল হলুদ একটা চুরিদার পড়ে আসছে ৷ দুর থেকে যত সুন্দর লাগছিল কাছে আসার পর তার সৌন্দর্য আরও দ্বিগুন বেড়ে গেল ৷
আমি হা করে তাকিয়ে থাকা দেখে অনিকা বলল ওই কি দেখ এভাবে ৷
আমিঃ তোমাকে দেখি কি সুন্দর তোমার চোখ ৷ সেই চোখের চাহনি ৷ তোমার মায়া ভরা মুখখানা ৷ আমিতো তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে সারাজিবন পার করে দিতে পারব ৷
অনিকাঃ এই মেহেদী এবার কিন্তুু বেশি বেশি হচ্ছে ৷
আমিঃ আরে না আমি সত্যি বলছি তোমাকে আজ অনেক সুন্দর লাগছে ৷
অনিকাঃ থাক আর পাম দিতে হবেনা ৷ চল ওই দিক টাতে দুজন হাটি ৷
চল যাই তারপর অনিকা আমার হাতটা নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে আঙুল নিয়ে খেলা করছে ৷ খুব ভাল লাগছে আমায় ৷ সুন্দর একটা অনুভুতি কাজ করছে আমার ভিতরে ৷
এই প্রথম কোন মেয়ের সাথে হাত ধরে হাটছি ৷ তারপর আমি আর অনিকা একজায়গায় দুজনে বসলাম ৷ আর অনিকার মাথাটা আমার কাধের উপর রেখে আমার হাত জড়িয়ে ধরে রাখছে ৷ আমি বেশ অবাক হলাম কারন সেত অভিনয় করছে কিন্তু এটা মনে হচ্ছে বাস্তব প্রেম করছি ৷
আমিঃ অনিকা একটা কথা বলব ৷
অনিকাঃ হুম বল একটা কেন হাজার টা কর ৷
আমিঃ আচ্ছা তুমি আমার সাথে কি কারনে এমন অভিনয় করছ ৷
অনিকাঃ এত তাড়া কেন তোমার সময় হলে সব জানতে পারবে ৷
তারপর কিছুক্ষন কথা বলে অনিকা কে বাড়ি পৌছায়ে দিলাম ৷ তারপর আমি নিজেও বাড়ি চলে আসলাম ৷ রাতের খাবার খেয়ে যেই ঘুমাতে যাব ওমনি মোবাইলের বিরক্তি কর রিংটোন টা বেজে উঠল ৷ মোবাইল হাতে নিয়ে দেখি অনিকা ফোন দিছে ৷ ফোন রিসিভ করলাম করে কিছুক্ষন কথা বলে ঘুমিয়ে পড়লাম ৷
সকালে আমি আর রাজু দুজনে কলেজ যাচ্ছি ৷ কলেজের গেট দিয়ে ডুকতে গিয়ে দেখি অনিকা দাড়িয়ে ৷
তবে কি অনিকা এই কলেজে ভর্তি হয়েছে ৷ তখন রিয়া 【 রাজুর গফ】বলল কি ভাইয়া অবাক হলেন তাইনা ৷ অনিকা আপু এই কলেজে ভর্তি হয়েছে ৷
আমি মনে বললাম যাক ভালই হল আমার ক্রাশের সাথে সবসময় কথা বলা যাবে ৷
অনিকা বলল কি ভাবছ এত ৷ না কিছুনা এমনি ৷ চল ক্লাসে যায় তাই বলে যে যার ক্লাসে চলে আসলাম ৷
কলেজ শেষে দেখি রিয়া একা দাড়িয়ে আছে ৷ আমি গেলাম তার কাছে গিয়ে প্রশ্ন করলাম ৷ আচ্ছা রিয়া অনিকা আমার সাথে কেন এমন প্রেমের অভিনয় করতে বলছে তুমি কি কিছু যান ৷
রিয়াঃ না ভাইয়া আমি কিছু যানিনা ৷
আচ্ছা ঠিক আছে তুমি যাও ৷ তবে আমাকে যানতেই হবে অনিকা কেন এমন করছে আমার সাথে ৷
তারপর আমি আর রাজু বাসায় চলে আসলাম ৷ এসে সাথে সাথে দেখি অনিকার ফোন মানে ৷ অনিকা ফোন দিছে ৷
আমি ফোন রিসিভ করলাম আর সাথে সাথে ঝাড়ি শুরু হয়ে গেল ৷ আমি কিছু বুঝলাম না তবে এটুকু বুঝলাম ৷ আমি রিয়ার কাছ থেকে ওই প্রশ্ন করেছিলাম তাই ঝাড়ি দিছে ৷
তারপর অনিকা বলল আমি বলেছি সময় হলে তুমি সব জানতে পারবে ৷【রাগি কন্ঠে】 আর কিছু না বলে ফোন রেখে দিল ৷
পরের দিন সকালে ফ্রেশ হয়ে কলেজে গেলাম ৷ তবে এখনও অনিকা আসেনি ৷ তাই আমি আর রাজু ক্লাসের কিছু বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছি ৷ সাথে কিছু মেয়ে বন্ধু ছিল তারা আবার আমার সাথে কথা বলার সময় শরিরে স্পর্শ করে কথা বলছে ৷ আর তখনি অনিকা চলে আসল ৷
আমি মনে করেছি যেহেতু প্রেমটা অভিনয় তাই অনিকা রাগ করবেনা ৷ কিন্তু আমার ধারনা ভুল প্রমানিত করে ৷ অনিকা কাছে এসে আমার হাত ধরে একটু ফাকা জায়গায় টেনে নিয়ে গেল ৷
আর বলল তুই ওদের সাথে এমন হেসে হেসে কথা বলছিস কেন ৷【আমি অনিকার মুখ থেকে তুই তুকারি শুনে বেশ অবাক হলাম】 ৷ আর ওই ছেমরি টা তোকে স্পর্শ করল কেন ৷
আমিঃ আমারা তো ক্লাস ফ্রেন্ড তো এভাবে কথা বলবনা তো কি বলব ৷
তুই কোন মেয়ের সাথে কথা বলবিনে ৷ আমাদের প্রেমর চুক্তি ৬ মাসের তাই আমি তোর গার্লফ্রেন্ড ৷ এই ৬ মাসের মধ্যে যদি কোন মেয়ের সাথে কথা বলতে দেখি ৷ তাহলে আমার থেকে খারাফ কেউ হবেনা বুঝছ ৷
হুম বুঝছি কিন্তু অভিনয় টা কি কারনে করছ সেটা তো বলবে নাকি ৷
ওই তোকে এক কথা কয়বার বলব যে সময় হলে সব জানতে পারবি ৷
আমাদের প্রেমর চুক্তি ৬ মাসের তাই আমি তোর গার্লফ্রেন্ড ৷ এই ৬ মাসের মধ্যে যদি কোন মেয়ের সাথে কথা বলতে দেখি ৷ তাহলে আমার থেকে খারাফ কেউ হবেনা বুঝছ ৷
হুম বুঝছি কিন্তু অভিনয় টা কি কারনে করছ সেটা তো বলবে নাকি ৷
ওই তোকে এক কথা কয়বার বলব যে সময় হলে সব জানতে পারবি ৷ আমি মন খারাফ করে বসে রইলাম ৷
পরেরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে কলেজে চলে আসলাম ৷ কিন্তুু অনিকা কে দেখলাম না ৷ তাই অনিকার নাম্বারে ফোন দিলাম কিন্তু ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে ৷
তাই আমি রিয়ার কাছে গিয়ে অনিকার কথা শুনার জন্য গেলাম ৷ দেখি রাজু আর রিয়া একসাথে বসে গল্প করছে ৷ আমি তাদের পাশে বসলাম ৷ আমি বললাম অনিকা আজ কলেজে আসিনি কেন আর মোবাইল ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে ৷ তারপর রিয়া বলল যে অনিকা নিজের বাড়ি গিয়েছে তার আম্মুর শরীর খারাফ সেইজন্য ৷
তারপর আমি ওখান থেকে চলে এসে সোজা ক্লাসে গেলাম ক্লাস শেষে ভাল লাগছেনা তাই বাসাই চলে আসলাম ৷ এসে একটা ঘুম দিলাম ৷ এক ঘুমে বিকাল হয়ে গেল তারপর বন্ধুদের সাথে দিচ্ছি তখন অনিকা ফোন দিল ৷
আর বলল যে আমি ১০ দিন পড়ে ওখানে আসব ৷ আমি ওকে বলে ফোন রেখে দিলাম ৷ তবে মনটা খারাফ হয়ে গেল যে অনিকার সাথে দশ দিন দেখা হবেনা ৷
আজ দুুৃইদিন অনিকার সাথে দেখা তবে দুএকবার ফোনে কথা হয়েছে ৷ আমি ভীষন মিস করছি অনিকা কে ৷ তার সাথে হাতে হাত রেখে ঘুরে বেড়ানো ৷ যখন একজায়গায় বসতাম তখন আমার কাধে মাথা রাখা সব মিস করছি ৷
আমিতো অনিকা কে সেই প্রথমে দেখায় ভালবেসে ফেলি ৷ আর অনিকা যখন বলল যে আমার সাথে ভালবাসার অভিনয় করতে হবে তখন বেশ অবাক হয়ে ছিলাম ৷
সারাটা দিন খুব খারাফ কাটে ৷ ঠিকমত কলেজ যাওয়া হয়না ৷ মনে হয় কত যনম দেখিনি ৷ আমি যে অনিকা কে প্রচন্ড ভালবেসে ফেলেছি ৷ কিন্তুু অনিকা কি বুঝবে আমার ভালবাস ৷ নাকি আর দুই মাস পড়ে চুক্তি শেষ হয়ে হয়েগেলে আমাকে ছেড়ে চলে যাবে ৷
এই কয়দিন খুব কষ্টে পাড় করছি দিন গুলো ৷ কলেজে গেলে এক কোনায় মনমরা হয়ে বসে থাকি ৷ তখন রিয়া এসে বলল যে অনিকার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে ও আর পড়বেনা আর তোদের চুক্তির প্রেম এখানেই শেষ ৷ আমি রিয়ার কথা শুনে যে আকাশ সোজা মাটিতে আচরে পড়লাম ৷ আমি কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলি ৷ তখন আমি অনিকা কে ফোম দিলাম দেখি ফোন রিসিভ হচ্ছে দুই বার রিং হওয়ার পর অনিকা ফোন রিসিভ করল ৷ অনিকা আমি এ কি শুনছি ৷ তোমার নাকি বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে ৷
অনিকা চুপ করে আছে কোন কথা বলছেনা ৷ কি হল তুমি চুপ করে আছ কেন কথা বল আমার সাথে ৷
অনিকা বলল দেখ আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে আর তোমার সাথে যা করছি তার জন্য মাফ করে দিও ৷ ঠিক আছে মাফ করে দেব ৷ কিন্ত আমি তো তোমাকে ভালবাসি ৷ আমিতো তোমার সাথে কোন রকম অভিনয় করিনি ৷ আমি যেদিন তোমাকে প্রথম পার্কে দেখি তখন তোমাকে আমার খুব ভাললেগেছিল ৷ এককথায় বলতে গেলে প্রথম দেখায় আমি তোমাকে ভালবেসে ফেলি【 কান্না করে বলছি】
শোন মেহেদী যা হবার তা হয়ে গেছে এখন আমি আর অতিত দেখতে চায়না ৷ সামনে আমার বিয়ে যদি সময় হয় তাহলে আস মানা করবনা ৷ আর আমার সাথে কোন রকম যোগাযোগ করবে না ৷
ঠিক আছে তুমি যখন বলছ আর যোগাযোগ করবনা ৷ তবে একটা কথা বলতে হবে৷
কি কথা তাড়াতাড়ি বল ৷
তুমি আমার সাথে কে এমন প্রেমের অভিনয় করলে ৷ তোমাকে বলতেই হবে ৷
আমি তোমার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবনা ৷ আমাকে মাফ করে দিবে ৷ আর পারলে আমাকে ভুলে যাও ৷
তারপর ফোন রেখে দিল ৷ আমি ওখানে বসে বসে কান্না করছি আর চোখ দিয়ে দু ফোটা করে পানি গড়িয়ে পরল ৷
আমি আস্তে আস্তে উঠে বাড়ি চলে আসলাম ৷ এসে ঘরের দড়জা বন্ধ করে চিৎকার দিয়ে কান্না করলাম ৷ আর তখন ভাবলাম যে আমাকে কোনদিন ভালইবাসিনি কেন তাকে ভেবে কান্না করছি ৷
আর তখনি আম্মু ডাক শুনেতে পেলাম ৷ আমি ছোখ মুছে স্বাভাবীক হয়ে দড়জা খুলে দিলাম ৷ আম্মু ভিতরে এসে বলল কি করছিস বাবা ৷
না আম্মু কিছু করছিনা কলেজ থেকে এসে ভাল লাগছিল না তাই এসে শুয়ে ছিলাম ৷
আম্মু বলল আমি সব বুঝিরে বাবা তুই এই কয়দিন কেমন যেন হয়ে গেছিস ৷ ঠিকমত কথা বলিস না ৷ খাওয়া দাওয়া করিস না ৷ বন্ধদের সাথে ঘুরতে যাসনা ৷ কি হয়েছে বল বাবা আমি সব ঠিক করে দেব ৷
আমিঃ না আম্মু আমার কিছু হয়নি ৷ তুমি কি কিছু বলবা আম্মু ৷
আম্মুঃ হ্যারে বাবা তুই তো যানিস আমি সারাদিন বাড়িতে একলা একলা বসে থাকি খুব খারাফ লাগেল ৷ তোরাও ঠিক মত বাড়ি থাকিস নে ৷ তাই কারও সাথে কথা বলতে পারিনা ৷
আমিঃ তো আমি কি করতে পারি ৷
আম্মুঃ আমি বলি কি তুই একটা বিয়ে করে ফেল তাহলে আর এক একা লাগবেনা ৷
আমিঃ তুমি কি বলছ মা আমি এখনও পড়াশুনা করি আর পড়াশুনা শেষ হতে অনেক দেড়ি ৷ আর আমি বিয়ে করে বউকে কি খাওয়া বো ৷
মাঃ সে নিয়ে তোর চিন্তা করা লাগবেনা আমাদের যা সম্পত্বি আছে তোর বউ কেন তোর ছেলে মেয়ে বসে বসে খাবে তো সারাজীবন ও শেষ হবেনা ৷
আমিঃ তা ঠিক আছে কিন্তু আমি এখন বিয়ে করবনা ৷ আর আমার এখনও বিয়ের বয়স হয়নি ৷
মাঃ আমি এত কিছু যানিনা তুই বিয়ে করব ব্যাস আমার আর একা থাকতে ভাল লাগেনা ৷
আমি বেশ কিছুক্ষন ভেবে দেখলাম অনিকা যদি বিয়ে করতে পারে তাহলে আমি পারবনা কেন ৷ আমিও দেখিয়ে দেব যে আমিও বিয়ে করতে পারি ৷
তারপর আমি আম্মুর রুমে গিয়ে বললাম আমি রাদি মেয়ে দেখতে পার ৷
তখন মা বলল মেয়ে আমার দেখা আছে আমি কালকে গিয়ে বিয়ের পাকা কথা বলে আসব ৷
আমি ভাবলাম আমার মা দেখছি আমার দ্রুত বলার সাথে সাথে বিয়ে ঠিক ৷ আমি আর কিছু না বলে রুমে চলে আসলাম,৷ তারপর ডিনার করে ঘুমিয়ে পড়লাম ৷
আজ আর কলেজে যায়নি ভাল লাগছেনা তাই ঘরে বসে টিভিতে F a sumon এর গান শুনছিলাম ৷ তবে অনিকার কথা খুব মনে পরছিল খুব ভালবেসেছিলাম ওকে ৷ আমি আর পুরোনা কথা মনে করতে চায়না ৷ বিকালে নিজের রুমে মোবাইল টিপতে ছিলাম ৷
তখন আম্মু আসল আর বলল এই মাসে ২৭ তারিখে তোর বিয়ে ৷ তোর যে কয়টা বন্ধু আছে বলতে পারিস ৷
আমি শুধু রাজু আর শাকিল নামে এক বন্ধু কে দাওয়াত দিয়েছি ৷ তবে রিয়াকেউ দিয়েছিলাম কিন্তু রিয়া বলল ২৭ তারিখে অনিকার বিয়ে আর ও হচ্ছে আমার মামাত বোন তো সেখানে আমাকে যেতেই হবে ৷ আমি আর জোর করলাম না ৷
দেখতে দেখতে বিয়ের দিন চলে আসল ৷ বিয়ের দিন আমি একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছিনা ৷
কাজি সাহেব যখন মেয়ের নাম ইভা আক্তার অনিকা বলল তখন আমি ভাবলাম এ কোন অনিকা হতে পারে ৷ 【আমি শুধু জানতাম ওর নাম অনিকা】 আমার ভাবান্তর চেহারা দেখে বন্ধুরা মিটমিটে হাসছে ৷ আমি ভাবলাম দুনিয়াই এক নাম অনেক জনের হতে পারে৷
বিয়ের কাজ শেষ হলে আমরা বউ নিয়ে বাড়ি চলে আসলাম ৷ তারপর আমি একটু বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে চলে আসলাম ৷ আড্ডা দিতে দিতে ১১:৪৬ বেজে গেছে তখন বন্ধুরা জোর করে বাসর ঘরে ডুকলাম ৷ আর বন্ধুদের কাছে কিছু টিপস নিয়ে নিলাম ৷
বাসর ঘরে ডুকে দেখি বউ আমার লম্বা ঘুমটা দিয়ে বসে আছে ৷ তারপর বউ এসে আমার পায়ে ছালাম করে আবার বিছানায় গিয়ে বসল ৷
আমি তখন বললাম আপনিতো আমাকে না দেখে বিয়ে করেছেন ৷ আপনি এই বিয়ে নিজের ইচ্ছায় করছেন না জোর পূর্বক ৷
আগে আমাকে তুমি করে বলবেন কারন আমি এখন আপনার বিয়ে করা বউ ৷ আর আমি এই বিয়ে নিদের ইচ্ছায় হয়েছে ৷
আমার মনে হল কন্ঠটা একটু চেনা চেনা লাগছে ৷ কিছুটা অনিকার মত ৷ ওকে ঠিক আছে তুমি করে বলব ৷ তারপর আমি বললাম তোমার ঘুমটাটা একটু সরাবে তোমার চেহারা একটু দেখি ৷
আপনি নিজে সরিয়ে নেন কারন আমি আপনার এখন বিয়ে করা বউ ৷
তারপর আমি ঘুমটা সরিয়ে দেখি এতো আমার অনিকা ৷ আমি যাকে ভালবাসতাম ৷ তুমি এখানে কেন আমার বিয়ে করা বউ কই গেল ৷
আরে গাধা আমিই তোমার বিয়ে করা বউ আমার নামই ইভা আক্তার অনিকা ৷
তাহলে তুমি সেদিন ইচ্ছা করে মোবাইলে এত কথা বলেছে ৷
হুম এটা আমার ও তোমার আম্মু মানে আমার শাশুরি আম্মার প্লান ৷
তাইতো বলি আমাকে কেন এত বিয়ে দেয়ার জন্য উঠে পড়ে লাগছে ৷ আচ্ছা একটা কথা বলব ৷
হুম বল ৷
তুমি কেন আমার সাথে চুক্তির প্রেম করলা কেন অভিনয় করলা ৷
আচ্ছা শোন তোমার সাথে একটা মেয়ে ফেবুতে চ্যাট করত মনে আছে আইডির নাম অবুজ বালিকা ৷ আমি তোমাকে প্রতিদিন মেসেজ করতাম ৷ কিন্তু তুমি রিপ্লায় দিতেনা ৷ অনেক অনুরোধ করার পর তুমি আমার ম্যাসেজের রিপ্লায় করতে ৷
হুম মনে আছে তো আমার গল্প গুলো নিয়মিত পড়ত ৷ আর আমাকে মনে ভালবাসত এটা আমি বুঝতাম কিন্তু কখনও বুঝতে দেয়নি ৷
হুম আমিই সে অবুজ বালিকা ৷ একদিন আমি রিয়ার বলছিলাম এক লেখকের গল্প খুব ভাল লাগে ৷ তখন রিয়া বলে কোন লেখক আর লেখকের নাম কি ৷ আমি তখন তোমার নাম বললাম মেহেদী হাসান ৷ তখন রিয়া বলল এতো আমাগের কলেজে পড়ে আর আমাদের ভাল বন্ধু আর রাজুর 【 আমার বয়ফ্রেন্ড】এর বেস্ট ফ্রেন্ড ৷
তখন আমি বলি মেহেদীর সাথে দেখা করব ৷ তাই সেদিন রিয়ার সাথে গিয়েছিলাম তোমার সাথে ঘুরতে ৷
হুম বুঝলাম কিন্তু চুক্তি করার কি দরকার ৷
আমি জানতাম যে তোমাকে সরাসরি বললে তুমি রাজি হবে না তাই এই বুদ্ধি করা হয়েছে ৷
এবারও বুঝলাম কিন্তু বিয়ের ব্যাপার কিভাবে হল ৷
প্রেম চলা কালিন【মানে চুক্তির প্রেম】তখন আমি আর রিয়া গোপনে তোমার আম্মুর সাথে দেখা করে সব খুলে বলি প্রথম থেকে শেষ প্রর্যন্ত ৷ তোমার আম্মুও রাজি হয়ে গেল ৷ তাই ভাবলাম তুমি যেমন প্রথমে আমাকে কষ্ট দিছ ৷তাই তোমাকে একটু কষ্ট দিই ৷ তাই এই প্লান ৷
আমিঃ এখন কি আমাকে ভালবাসা যবে ৷
অমিকাঃ না যাবেনা কারন তুমিতো এখনো আমাকে প্রোপজ করনি ৷
আমি অনিকার সামনে হাটু গেড়ে অনিকার হাত দুটি ধরে বললাম ৷হবে কি আমার গিনের সূর্য যে আমার জিবনকে আলোকিত করবে ৷ হবে কি আমারঐ পূর্ণিমার চাদ যে আলোকিত করবো আমার রাত ৷ হবে কি তুমি আমার না দেখা সপ্ন যা আমি তোমাকে নিয়ে দেখতে চায় ৷ হবে কি আমার সন্তানে আদর্শ আম্মু ৷ হবে কি আমার আম্মুর লক্ষি বউমা ৷
এবার অনিকা মেহেদীর বসা থেকে উঠায়ে জরিয়ে ধরল ৷ আর বলল আমি তোমার সবকিছু হতে চাই ৷ সব কিছুর ভাগিদার হতে চায় ৷
আমিঃ love you.
অনিকাঃ love you too.
সমাপ্ত